শীতের মধ্যে ওজন কিভাবে ঠিক রাখবেন

শীতের মধ্যে হেলথ মেইনটেইন করা অন্যান্য মাস থেকে খুব বেশি চ্যালেঞ্জিং হয়ে পরে৷ কারণ শীত জুড়ে থাকে নানারকম আয়োজন বিয়ের দাওয়াত, পিকনিক, পিঠাপুলি আর কত কি!
শীতের মধ্যে গরম গরম পাকোড়া কিংবা তেল জাতীয় খাবার ছাড়া যেন সন্ধ্যা জমে উঠে না৷ তাই শীতের মধ্যে হেলথ কিংবা খাবার বেশ কঠিন৷ আজ জেনে নেয়া যাক কিভাবে শীতকে উপভোগ করেও নিজের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব :

১। ব্যায়াম করুন :

আমাদের ওজন বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে আমরা যতটুকু খাবার গ্রহণ করি, ঠিক ততটুকু শারিরীক পরিশ্রমের করি না। যার ফলে অতিরিক্ত ফ্যাট আমাদের শরীরে জমে যায় ও দেখা দেয় নানাধরণের রোগ৷ শীতের যেহেতু অনেক তেল জাতীয় খাবার খাওয়া হয়ে যায় তাই সেই বাড়তি ক্যালরি খরচ করতে আমাদের ব্যায়াম করতে হবে। ব্যায়ামের পরিবর্তে প্রতিদিন ৪০ মিনিট হাঁটাও যেতে পারে৷ ব্যায়াম আমাদের হেলথ ঠিক রাখার পাশাপাশি আমাদের মানসিকভাবেও ভালো রাখতে সাহায্য করে৷ ব্যায়ামের ফলে ডোপামিন হরমোন রিলিজ হয়, এতে আমাদের মন ভালো থাকে৷

২। ব্রেকফাস্ট মিস দেয়া যাবে না :

বলা হয় আপনার সারাদিন কেমন যাবে তা নির্ভর করছে আপনার সকালের উপর৷ তাই সকালটা যাতে শুরু হয় হেলদি ব্রেকফাস্ট দিয়ে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। ভালো করে ব্রেকফাস্ট করে ঘর থেকে বের হলে আনহেলদি খাবারের ক্রেভিং খুব কম হয় এবং অনেকটা সময় পেট ভরা থাকে৷ ব্রেকফাস্টে ডিম ও দুধের মতো প্রোটিন রাখতে হবে৷ এছাড়া কলা কিংবা আপেল খেতে পারেন।

৩। পানি পান করতে হবে :

অনেক সময় আমাদের শরীরের পানির প্রয়োজন হলে আমাদের ক্ষুধা লাগে ও সেই ক্ষুধা নিবারন করার জন্য আমরা অতিরিক্ত খেয়ে ফেলি। ফলাফল হিসেবে আমাদের ওজন বেড়ে যায়৷ তাই অতিরিক্ত ক্ষুধা লাগলে এক গ্লাস পানি খেয়ে নিতে পারেন৷ এছাড়া প্রতিদিন যাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন। কারণ শীতকালে ঘাম কম হয় বলে পানি পান করা তেমন হয় না৷ কিন্তু আবহাওয়া যেমনই থাকুক না কেন পানি শরীরের জন্য সবসময় প্রয়োজনীয়। চাইলে অতিরিক্ত চিনি না মিশিয়ে ফলের তাজা রস খেতে পারেন। এতে পানির চাহিদা পূরন হওয়ার পাশাপাশি, ফলের পুষ্টিও পাওয়া যাবে।

৪। সবুজ শাকসবজি খেতে হবে :

শীতের মধ্যে বাজারে সাশ্রয়ী দামে অনেক রকমের শাকসবজি পাওয়া যায়৷ তাই খাবারের পাতে বেশি করে সবজি রাখতে হবে যেমন লাউ, শিম, মিষ্টি কুমড়ো, বাঁধাকপি, ফুলকপি, গাজর ইত্যাদি। ভাতের পরিমান কম করে শাক সবজির পরিমাণ বাড়াতে হবে৷ বেশি করে সবজি খেলে আমাদের ক্ষুধা কম লাগবে ও অতিরিক্ত ক্যালরি জাতীয় খাবার খাওয়া হবে না৷

৫। প্রোটিন জাতীয় খাবার খেতে হবে :

প্রোটিন আমাদের শরীরের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ । এছাড়া প্রোটিন দীর্ঘ সময় আমাদের পেট ভরা রাখে। তাই তিনবেলার আহারেই প্রোটিন খেতে হবে। যেমন মাংস, মাছ, ডিম ইত্যাদি। মাছ সবচেয়ে উপকারী প্রোটিন৷ মাছের তেল আমাদের ওজন কমাতে সাহায্য করে৷ তবে গরুর মাংস ও চিংড়ি মাছের মতো প্রোটিন এড়িয়ে যাওয়া ভালো।

৬। ক্ষুধা পেটে না থাকা :

খুব বেশি ক্ষুধা অনুভব হবার আগেই খাবার খেয়ে নিতে হবে কারণ দীর্ঘ সময় খাবার না খেয়ে থাকলে অতিরিক্ত ক্ষুধা লেগে যায় ফলে আমরা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি খেয়ে ফেলি,
যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ক্ষতিকর। তাই দীর্ঘ সময় খালি পেটে না থেকে কিছুক্ষণ পরপর স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খেতে হবে।
কোন দাওয়াত কিংবা ঘর থেকে বের হবার আগে আমরা যদি স্বাস্থ্যকর খাবার ঘর থেকে খেয়ে যাই তাহলে বাইরে গিয়ে আমাদের কিছুটা কম খাবার গ্রহণ করা হবে।

অতিরিক্ত ওজন কখনোই আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো না।
এটি যেমন নানা ধরনের রোগ ডেকে আনে তার পাশাপাশি আমাদের আত্মবিশ্বাস কমিয়ে দেয়। অতিরিক্ত ওজন বেড়ে গেলে তা কমিয়ে আনা অনেক বেশি কষ্টসাধ্য, তাই সব সময় নিজের ওজনের দিকে খেয়াল রাখতে হবে ওহাইট অনুযায়ী আদর্শ ওজন বজায় রাখতে হবে। লাইফ স্টাইলে কিছুটা পরিবর্তন নিয়ে আসলে শীতের মতো উৎসবমুখর ঋতুতেও আপনি আপনার ওজন ঠিক রাখতে পারবেন।

Leave a Reply