বিয়ের আগে নিজের যত্ন

শীতের গন্ধ ছড়িয়ে পরতেই শুরু হয়ে যায় বিয়ের মৌসুম৷ বিয়েকে ঘিরে থাকে নানা রকম আয়োজন৷ সবাই চায় বিয়ের দিন নিজেকে সবচেয়ে সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলতে। বিয়ের কয়েক মাস আগে থেকেই শুরু হয় প্রস্তুতি। তাই জেনে নেয়া যাক বিয়ের আগে কিভাবে নিজের যত্ন নেয়া যায় :

বিয়ের আগে দুই ধরনের প্রস্তুতি নেয়া প্রয়োজন মানসিক ও শারিরীক। তবে কোনো কিছুর ফলাফল রাতারাতি পাওয়া সম্ভব নয়, তাই বিয়ের প্রোগামের অন্তত এক থেকে দুই মাস আগে থেকে প্রস্তুতি নেয়া শুরু করতে হবে৷ প্রথমেই ত্বকে যত্ন নেয়া শুরু করতে হবে, হাতে সময় নিয়ে নিজের যত্ন নিলে যেকোনো সমস্যা সারিয়ে তোলা সম্ভব। বিয়ের প্রোগামের আগপর্যন্ত একটি বিশেষ স্কিন কেয়ার রুটিন অনুসরণ করতে পারেন৷ রুটিনে অবশ্যই টোনার ও মশ্চেরাইজার রাখতে হবে৷ ত্বকের ধরন বুঝে যত্ন নিতে হবে, যেহেতু শীতকালে সবারই কমবেশি ত্বক ফেটে যায় তাই ত্বককে আদ্র রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। ত্বক সঠিক যত্ন না পেলে বিয়ের প্রোগ্রামে মেকআপ সঠিকভাবে বসবে না৷ ক্লিনসার দিয়ে ভালো করে মুখ পরিষ্কার করে টোনার ব্যবহার করে মশ্চারাইজিং করতে হবে৷ যেহেতু আবহাওয়ায় এখন আদ্রতা কম তাই পানির
সংস্পর্শে গেলেই মশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। শীতকালে অনেকেই সানস্ক্রিন ব্যবহার করেন না, কিন্তু সানস্ক্রিন যে কোন আবহাওয়াতেই ব্যবহার করতে হবে। তাই বিয়ের শপিং কিংবা যে কোন কাজে ঘর থেকে বের হলে সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে ভুলবেন না। ঘরোয়া কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করেও আপনি রূপচর্চা করতে পারেন যেমন হলুদ, মধু, বেসন ইত্যাদি ত্বকের যত্নে ব্যবহার করা যেতে পারে। ত্বকের পাশাপাশি ঠোঁট কেউ মশ্চারাইজড রাখতে ভুলবেন না। সেক্ষেত্রে ভালো একটি লিপবাম ব্যবহার করতেন পারেন। ঠোঁটের কালচে ভাব দূর করতে কাঁচা দুধ ঠোঁটে ব্যবহার করতে পারেন কিংবা লেবু ও চিনি দিয়ে ঠোঁটে ভালো মতো ম্যাসাজ করুন এতে ঠোঁটের মরা চামড়া উঠে আসবে৷

বিয়ের সাজে নানাধরণের হেয়ারস্টাইল করা হয়। তাই চুলের যত্নেও কোনো আপোষ করা যাবে না। শীতের সময় চুলে খুশকি হওয়ার প্রবনতা বেড়ে যায়৷ তাই সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার হট ওয়েল ম্যাসাজ করতে হবে৷ ম্যাসাজের চলে মাথার রক্ত চলাচল দ্রুত হবে৷ গোসলের সময় খেয়াল রাখতে হবে চুলে যাতে গরম পানি ব্যবহার না করা হয়, গরম পানি ফলে চুলে গোড়া নরম হয়ে যাবার সম্ভবনা থাকে। তাই চুল সব সময় ঠান্ডা পানি দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। চুলের ধরন বুঝে ভালো একটি শ্যাম্পু ব্যবহার করে ডিপ কন্ডিশনিং করতে হবে। বিয়ের সময় যেহেতু চুলের অনেক ধরনের এক্সপেরিমেন্ট হবে তাই বিয়ের আগের কয়েকটা দিন চুল স্ট্রেট কিংবা ব্লো ড্রাই মতো হিট না দেয়াই ভালো৷ বিয়ের আগে চুল ট্রিম করে নিতে পারেন, এছাড়া স্যালুনে গিয়ে প্রোটিন ট্রিটমেন্ট নিতে পারেন। এতে চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া নিজের খুঁটিনাটি দিকেও খেয়াল রাখতে হবে যেমন
পার্লারে গিয়ে ভ্রু থ্রেডিং, আপার লিপ ইত্যাদি করিয়ে নিতে হবে।

বিয়ের আগে সৌন্দর্যের পাশাপাশি স্বাস্থ্য ও মানসিক দিকেরও খেয়াল রাখা প্রয়োজন। অনেকেই বিয়ের আগে ওজন কমাতে গিয়ে অস্বাস্থ্যকর ডায়েট করে ওজন কমানোর চেষ্টা করেন। এতে
পেটে চুল ও ত্বকের অনেক ক্ষতি হয়ে যায়। কখন রাতারাতি ওজন কমানো সম্ভব নয়, তবে একটি হেলদি লাইফস্টাইল অনুসরণ করতে হবে৷ জাঙ্ক ফুড ও অতিরিক্ত ক্যালরি আছে এমন খাবার বন্ধ করতে হবে। অতিরিক্ত তেল জাতীয় খাবার খেলে গ্যাস্ট্রিকের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই প্রচুর পরিমাণে সবুজ শাকসবজি খেতে হবে ও প্রতিবেলায় খাবারে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার যাতে থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
চিনি ও চিনি জাতীয় খাবার কম খেতে হবে। পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে, চিনি ছাড়া ফ্রেশ ফলের জুস খাওয়া যেতে পারে। বিয়ের আগে অনেকেই প্রচণ্ড মানসিক চাপে থাকে। চাপমুক্ত থাকার জন্য মেডিটেশন কিংবা ইয়োগা করা যেতে পারে।
চেষ্টা করুন প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ মিনিট হাঁটাহাঁটি করার। অতিরিক্ত রাত না জেগে সময়মতো ঘুমাতে হবে।

Leave a Reply