তীব্র গরমে বেড়ে চলছে ত্বকের সমস্যা

তীব্র দাবদাহের কারণে ত্বকের পরছে তার প্রভাব। অন্যান্য সময় থেকে তীব্র এই গরমে ত্বকের সমস্যার দ্বিগুণ আকারে বেড়ে চলছে। তাই জেনে নেয়া যাক গরমের সময় ত্বকের কোন ধরনের সমস্যা বেশি দেখা দেয় :

১। ব্রণ : গরমে অতিরিক্ত ঘামের ফলে রোমকূপের বন্ধ হয়ে যায়, এছাড়াও গরমে ত্বক থেকে অতিরিক্ত সিবাম নিঃসৃত হয়। এর কারণেই মূলত গরমের সময় ব্রণের প্রবনতা অন্যান্য সময় থেকে বৃদ্ধি পায়৷ আমাদের মুখের ত্বকে ব্রণ উঠলে আমরা সবচেয়ে বেশি লক্ষ্য করে থাকলে গরমে মুখ সহ পিঠ, কাঁধ, পেট বিভিন্ন স্থানে ব্রণ উঠে থাকে৷ এ সব ব্রণ অনেক সময় ব্যথাযুক্ত হয়ে থাকে। 

২। ছত্রাক সংক্রমণ : কিছু ছত্রাক মানব দেহে ইনফেকশন সৃষ্টি করার জন্য দায়ী। গরমের সময় এসব ছত্রাকের অত্যধিক বৃদ্ধি দেখা যায়। এ ধরণের সংক্রমণ দেহের যেকোনো স্থানেই হতে পারে। ইনফেকশনের ফলে লালচেভাব, ফোসকা, জ্বালাভাব, চুলকানি ইত্যাদি নানা ধরণের লক্ষন দেখা দেয়। ছত্রাক সংক্রমণ ছোঁয়াচে রোগ, দেখা যায় পরিবারের একজনের হলে খুব সহজেই তা অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পরে। কখন এই ইনফেকশন জটিল আকার ধারণ করে। গরমের অনেক বেশি ঘেমে গেলে এবং সেই ঘামে ভিজে যাওয়া পোশাক লম্বা সময় পরিধাণ করে থাকলে ছত্রাক সংক্রমণ হতে পারে। তাছাড়া গরমে আবহাওয়া উষ্ণ থাকার কারণে খুব সহজে শরীরে সংক্রমণ ঘটতে পারে। 

৩। ত্বকে পোড়া দাগ : অতিরিক্ত কড়া রোদে সরাসরি গেলে ত্বকে কালো ছোপ ছোপ দাগ পরতে পারে, অনেক সময় লাল হয়ে তা ফুলে যায় ও ব্যথা করে। সরাসরি সূর্যের আলো ত্বকের উপর পড়লে নানা ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। অনেকেই সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে অবহেলা করে সে ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি স্কিনের ক্ষতি হয়। সূর্যের আলোর মাধ্যমের ত্বক পুড়ে গেলে সেখানে র‍্যাশ ও চুলকানির মতো সমস্যা হতে পারে। ঘাম ও সরাসরি সূর্যের আলো প্রভাবে ত্বকে একটি অস্বস্তিকর অনুভূতি হয়ে থাকে। অতিরিক্ত র‍্যাশ ও সান বার্ন এর ফলে জ্বর কিংবা বমির মতো সমস্যাও হয়ে থাকে। ত্বকের এই পোড়া ভাব বছরের যে কোন সময় হলেও গ্রীষ্মের প্রবণতা সবচেয়ে বেশি বেড়ে যায়। 

৪। এলার্জি : কিছু মানুষ সারা বছরই এলার্জির সমস্যার সম্মুখীন হলেও গরমের সময় তার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি বেড়ে যায়। এর কারণ অতিরিক্ত তাপ ও তার ফলে সৃষ্ট হওয়া ঘাম। এছাড়া গরমকালে যে কোন পণ্য ও মেকআপ সামগ্রী অসচেতন ভাবে ব্যবহার করলেও এলার্জি সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিভিন্ন প্রসাধনসামগ্রীর রাসায়নিক পদার্থ সূর্যালোকের উপস্থিতিতে বিক্রিয়া করে অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া করে। এছাড়া গরমের মধ্যে পানি কম খাওয়া ও অতিরিক্ত তেল জাতীয় খাবার কিংবা বাইরের জাঙ্ক ফুড এর কারণেও শরীরের এলার্জি হতে পারে। দেখা যায় কিছু খাবার হয়তো সারা বছর তেমন সমস্যা হচ্ছে না কিন্তু বিশেষ করে তীব্র গরমে সে খাবারের ফলে স্কিনে র‍্যাশ কিংবা এলার্জির মতো সমস্যা হচ্ছে। 

৫। ত্বকের রুক্ষতা : প্রচলিত ধারণা হচ্ছে গরমকালে সবার ত্বক তৈলাক্ত ও তেল চিটে হয়ে যায়। কিন্তু অতিরিক্ত গরমে আবহাওয়া আদ্রতা হারায় বলে অনেকের ত্বক তখন রুক্ষ মলিন হয়ে যায়। ত্বকের রুক্ষতার কারণে কারো কারো ঠোঁট ফেটে রক্ত বের হয় এবং চামড়া খসখসে যায়। শুধু মুখের ত্বক নয় পুরো শরীরের ত্বক তখন রুক্ষ ও শরীর নিজস্ব প্রাকৃতিক তেল হারিয়ে ফেলে। গরমকালে আমাদের শরীর ঘেমে যায় বলে শরীর থেকে পানি ও লবণ বের হয়ে  যার ফলে আমাদের শরীরের পানির চাহিদা বেড়ে যায়। কিন্তু অনেক সময় পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা হয় না ফলে শরীর ভেতর থেকে হাইড্রোতেড না থাকার ফলে তক রুক্ষ হয়ে যায়। 

গরমে ত্বককে ভালো রাখতে করতে হবে বাড়তি স্কিন কেয়ার।
গরমে স্কিনকে রিফ্রেশ অনুভূতি দেয় এমন পণ্য বেছে নিতে হবে।
অনেকেই গরমে ময়শ্চারাইজার এড়িয়ে চলে কিন্তু যে কোন ঋতুতেই মশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে এবং রোদে বের হবার আগে অবশ্যই সানস্ক্রিন এপ্লাই করতে হবে। এছাড়া লাইফ স্টাইলে কিছু পরিবর্তন আনতে হবে যেমন প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা, ডায়েটে ভিটামিন সি যুক্ত খাবার রাখা।
এছাড়া বাহিরে বের হবার আগে ছাতা ও সানগ্লাস ব্যবহার করতে হবে।

Leave a Reply