পূজোতে অল্প সময়ে ঘর সাজাতে পারেন যেভাবে

পূজোতে নিজেকে সাজানোর পাশাপাশি ঘরকে সবাই চায় সুন্দর করে সাজিয়ে তুলতে। সবসময় ঘরের বড় আসবাবপত্র বদলে ফেলার সুযোগ হয় না। তবে ছোট ছোট কিছু প্রন্থা অবলম্বন করেই কিন্তু ঘরকে সুন্দর করে সাজিয়ে তোলা সম্ভব। তাই আজ আমরা জানব কিভাবে অল্প সময়ের মধ্যে এই পূজোতে আপনার ঘরকে সাজিয়ে তুলতে পারেন

বসার ঘর :

পূজোতে আসা মেহমান ও বন্ধুবান্ধবদের সাথে সময় কাটানো বা আড্ডা দেয়া হয়ে থাকে বসবার ঘরেই৷ তাই বসবার ঘরকে সাজিয়ে তুলতে হবে নান্দনিকভাবে৷ সোফায় উজ্জ্বল রঙের কুশন রাখতে পারেন, এছাড়া ঘরের কোণে বেতে ল্যাম্প রাখা যেতে পারে৷ যার স্নিগ্ধ আলো আপনার ঘরকে আরো বেশি নান্দনিক করে তুলবে৷ চাইলে মেঝেতে আলপনা করা যেতে পারে, পূজো আসলে অনেকেই ঘরে পেশাদার আলপনা আর্টিস্ট দিয়ে আলপনা করিয়ে নিচ্ছে। এছাড়া ঘরের খালি জায়গায় মাটির তৈরি শোপিস রাখা যেতে পারে। ঘরকে গ্রামীণ স্টাইলে সাজাতে চাইলে কুলো কিংবা পেইন্ট করা হারিকেন এনে রাখতে পারেন৷ মেহমানের সংখ্যা বেশি হলে বসবার ঘরে শীতল পাটি বিছিয়ে দিতে পারেন৷

শোবার ঘর :

আপনার শোবার ঘরের শোভা বাড়াতে পারে বেডশীট। তাই পূজোর সময় নকশী কাঁথার বেডশীট রাখতে পারেন কিংবা আরামকে প্রাধান্য দিলে কটনের ব্লক প্রিন্টের বেডশীট দিতে পারেন। পূজোর দিন গুলোতে লাল, কমলা, রয়েল ব্লু মতো উজ্জ্বল রঙগুলোকেই বেশি প্রাধান্য দেয়া হয়৷ তবে আপনি যদি ঘর জুড়ে স্নিগ্ধতা চেয়ে থাকেন তবে সাদা, আকাশী, হালকা গোলাপি রঙের বেডশীট বিছিয়ে দিতে পারেন৷ চেষ্টা করবেন বেডশীটের সাথে মিল রেখে ঘরের পর্দা টানিয়ে দিতে। বেড রুমের দেয়ালে নতুন কিছু পেইন্টিং ঝুলিয়ে দিতে পারেন৷

নির্দিষ্ট থিমে ঘর সাজানো :

আপনি চাইলে একটি থিম ঠিক করে ঘর সাজাতে পারেন যেমন
স্নিগ্ধতা চাইলে ঘরের প্রতিটি জিনিস সাদা রঙের রাখতে পারেন। পূজোর সময় অনেকেই নতুন ছোট কিছু ফার্নিচার কিনে থাকে সেক্ষেত্রে ফার্নিচারের রংও যাতে সাদা হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। কিংবা ঘর সাজাতে এখন বেশ ট্রেন্ডি জুট বা বাঁশের
অনুষঙ্গ। তাই চাইলে ঘরকে জুটের অনুষঙ্গ দিয়েও সাজিয়ে নিতে পারেন। আপনার ইনডোরের গাছগুলো জুটের ঝুড়িতে রাখতে পারেন৷

লাইটিং :

ঘর সাজাতে আলোর ব্যবহার এখন বেশ জনপ্রিয়। তবে বিভিন্ন কৃত্রিম লাইট ব্যবহারের আগে ঘরের সাইজের কথা অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে৷ ঘরে সেট করতে পারেন একসেন্ট লাইটিং৷ একসেন্ট লাইটিং নির্দিষ্ট কোনো একটি জিনিসকে হাইলাইট করে রাখবে। প্রিয় কোনো ছবিকে হাইলাইট করে একসেন্ট লাইট সেট করতে পারেন। এছাড়া স্পটলাইট, ওয়াল ব্রাকেট কিংবা হালকা হলুদ রংয়ের ল্যাম্প রাখা যেতে পারে৷ এছাড়া সিলিং এ ঝুলন্ত লাইটিং সেট করা সেট করা যেতে পারে৷ খাবার টেবিলের উপরে বেতের ঝুলন্ত লাইট ব্যবহার করতে পারেন৷ এছাড়া পূজোর সময় অনেকেই কাঁসার প্রদীপ কিংবা পুরো ঘরে মোমবাতি জ্বালিয়ে দেয় তাতে আরো ভিন্নমাত্রার সৌন্দর্য যোগ হয়।

খাবার পরিবেশন :

পূজোতে অনেকের কাছে মূল আকর্ষণের জায়গা থাকে ভরপুর খাবার। তাই খাবার পরিবেশনেও আলাদা নজর দিতে হবে৷ খাবার পরিবেশনে ভিন্নতা নিয়ে আসতে মাটি কিংবা কাঁসার প্লেট, গ্লাস, চামচ ব্যবহার করতে পারেন। ডাইনিং টেবিলে উজ্জ্বল রংয়ের টেবিল রানা ব্যবহার করতে পারেন। টেবিল রানারের সাথে মিল রেখে চেয়ারের কভার দিন। খাবারের ঘরে উষ্ণ আলোর ব্যবস্থা রাখুন।

ফুল ও গাছ :

পুজো উপলক্ষে ঘরের জন্য নতুন কিছু ইনডোর গাছ কিনতে পারেন। পূজোর দিনগুলোতে ঘরে তাজা ফুল রাখার চেষ্টা করবেন, এতে ঘরের শোভা আরো বেড়ে যাবে৷ গাছ গুলো রঙিন মাটির পাত্রে রাখা যেতে পারে।

পূজো আসলেই অনেকে ঘর সাজানো নিয়ে চিন্তায় পরে যায় আবার অনেকে মনে করেন ঘর সাজানো বুঝি অনেক ব্যয়বহুল। কিন্তু কিছু কৌশল অনুসরণ করে আপনার ঘরটি একদম মনের মতো সাজিয়ে তোলা সম্ভব৷ যে যার রুচি অনুযায়ী ঘর সাজিয়ে তোলে, তবে পূজোর সময় ঘর সাজানোর ক্ষেত্রে উজ্জ্বল রং ও দেশীয় ঐতিহ্যকে প্রাধান্য দেয়া উচিত

Leave a Reply