হাইলুরনিক এসিড নিয়ে যত কথা

হাইলুরনিক এসিড কি?

হাইলুরনিক অ্যাসিড হচ্ছে সুগার মলিকিউল, যা আমাদের ত্বকে প্রাকৃতিকভাবে তৈরি হয়। আমাদের দেহে লুব্রিকেটিং এজেন্ট হিসেবে কাজ করে। এটি একটি অনন্য সিন্থেটিক পদার্থ যার কোলাজেন ফাইবারের গঠনের উপর একটি উপকারী প্রভাব আছে। ত্বককে হাইড্রেটেড, ময়েশ্চারাইজড এবং প্লাম্পি রাখতে সাহায্য করে  তাছাড়া, এই এসিড ত্বকে পানি ধরে রাখতে সাহায্য করে। 

হাইলুরনিক এসিড ত্বকের জন্য কী কাজ করে?

আমাদের ত্বকের যত্নে হাইলুরনিক অ্যাসিড খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। আসুন জেনে নেই এই এসিড আমাদের ত্বকের জন্য কী কী কাজ করে থাকে।

ময়েশ্চারাইজিংঃ 

ত্বকে পানির অভাবে যে রুক্ষতা ও শুষ্কতার সৃষ্টি হয় তা দূর করতে হাইলুরনিক এসিড ম্যাজিকের মত কাজ করে।এই উপাদানটি নিস্তেজ হয়ে যাওয়া ত্বকের সেলগুলোকে পুনরায় সতেজ করে। একই সাথে ত্বককে ভিতর থেকে প্লাম্পি করে তোলে।

এন্টি এজিং বেনেফিটঃ 

ত্বক রুক্ষ অর্থাৎ ড্রাই হয়ে গেলে খুব তাড়াতাড়ি চোখের নিচে ভাঁজ, ফাইন লাইনস ও রিংকেলস পড়ে যায়। এই এসিড ত্বকের জন্য প্রয়োজনীয় হাইড্রেশন প্রোভাইড করে ত্বকের ভাঁজ এবং ফাইনলাইনস স্মুদ করতে সাহায্য করে। ত্বকে এন্টি এজিং বেনেফিট প্রদান করে ত্বকে থাকা বার্ধক্যের লক্ষণগুলো হ্রাস করে।

কোলাজেন প্রোডাকশন বৃদ্ধি করেঃ  

আমাদের দেহে প্রাকৃতিকভাবে যে কোলাজেন থাকে তার পরিমাণ বয়সের সাথে সাথে কমে যেতে থাকে। হাইলুরনিক এসিড কোলাজেন প্রোডাকশন বুস্ট করে আপনার স্কিনের ইলাস্টিসিটি ধরে রাখে।

ত্বকের মসৃণতা ও উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করেঃ 

অনেক সময় আমরা ত্বকের যত্ন নিলেও দেখা যায় ত্বকের শুষ্কতা, ব্রন, অনুজ্জ্বলতা এসব সমস্যা থেকেই যায়। হাইলুরনিক এসিড ত্বকের ইনফ্ল্যামেশন ব্রণ ও র‍্যাশের সমস্যা কমিয়ে ত্বকের মসৃণতা ও উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে।

ত্বকের ব্যারিয়ার রিপেয়ার করেঃ 

অনেক সময় বাজারের অনেক ক্ষতিকর ক্যামিকেলস ও প্রডাক্ট ব্যবহার করার ফলে আমাদের ত্বকের ব্যারিয়ার নষ্ট হয়ে যায়। এই ত্বকের ব্যারিয়ার রিপেয়ার করতে ও আগের তুলনায় স্ট্রং করে তুলতে হাইলুরনিক এসিড এর ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি ত্বকের পুরাতন সেলকে হায়ালুরনিক উজ্জীবিত করে ত্বককে ড্যামেজ থেকে রক্ষা করে ।

পোরস মিনিমাইজ করেঃ 

বয়সের সাথে সাথে অথবা জেনেটিক কারণে অনেক সময় আমাদের ফেইসের পোরস ওপেন হয়ে যায় ও আকারে বড় হয়ে যায়, এই আকারে বড় হয়ে যাওয়া পোরসগুলোকে টাইট করতে হায়ালুরনিক অ্যাসিড সাহায্য করে থাকে।

ত্বকের যত্নে হাইলুরনিক এসিড অন্তর্ভুক্ত করার উপায়

প্রতিদিনের স্কিনকেয়ার রুটিনে হাইলুরনিক এসিড ব্যবহার করলে ত্বকের সার্বিক সুস্থতা বজায় থাকে।

ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়।

যেভাবে আপনি স্কিনকেয়ার রুটিনে যেভাবে এই এসিড অন্তর্ভুক্ত কড়তে পারেনঃ

১। ময়েশ্চারাইজারের সাথে মিক্স করেঃ আপনার ময়েশ্চারাইজার থেকে এক্সট্রা হাইড্রেশন বুস্টিং পাবার জন্য ময়েশ্চারাইজারের সাথে হাইলোরনিক এসিড মিক্স করে এপ্লাই করতে পারেন। এতে স্কিনে হাইড্রেশন লক হয়ে যাবে এবং দীর্ঘ সময় পর্যন্ত ত্বককে প্লাম্পি ও মসৃণ রাখবে। 

২। সিরাম হিসেবেঃ সিরাম হচ্ছে এক ধরনের স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট। যা খুব ছোট ছোট মলিকলস দ্বারা তৈরি হয় ফলে খুব সহজেই ত্বকের সাথে মিশে যেতে পারে। তাই  সিরামের মাধ্যমে হাইলুরনিক এসিড খুব ত্বকের গভীরে সহজেই পৌঁছে যায় এবং এভাবেই এই উপাদানের সর্বোচ্চ ফলাফল পাওয়া সম্ভব।

৩। শিট মাস্কের সিরাম হিসেবেঃ শিট মাস্ক হচ্ছে পাতলা একটি পর্দা যা মুখের ত্বকে ব্যবহারের উপযোগী করে বানানো হয়। এই মাস্ক সাধারণত প্যাকেটে একটি বিশেষ ধরণের তরলে বা সিরামে ভেজানো থাকে। এই সিরামে হাইলুরনিক এসিড ব্যবহার করলে এটি ত্বককে হাইড্রেট রাখে, ত্বকের শুষ্কতা রোধ করে এবং নরম, মসৃণ ও কোমল ত্বক নিশ্চিত করে।

৪।আই ক্রিমঃ আমাদের আই এরিয়ার স্কিন ফেইসের বাকী অংশের স্কিনের চেয়ে তুলনামূলক পাতলা হয়ে থাকে। তাই আই এরিয়ার ত্বক খুব সহজেই ড্রাই হয়ে পড়ে। আই ক্রিমে হাইলুরোনিক এসিড থাকলে তা এক্সট্রা হাইড্রেশন বুস্ট করে আই এরিয়াকে হেলথি ও প্লাম্পি করে তোলে।

হাইলুরোনিক এসিড সম্পর্কে ভুল ধারণা

অনেকেই ভেবে থাকেন যে অয়েলি স্কিনের আলাদাভাবে হাইড্রেশন এর প্রয়োজন নেই। তবে এটি সম্পূর্ণ ভুল। আসলে, অয়েলি স্কিন হাইড্রেশন হ্রাস করে এবং ত্বকের হাইড্রেশন হ্রাস করতে অতিরিক্ত তেল উৎপন্ন করে। সুতরাং যে কোনও হাইলুরোনিক এসিড যুক্ত পণ্য অয়েলি স্কিনের জন্য সেরা সমাধান হতে পারে।

Join our community

2 thoughts on “হাইলুরনিক এসিড নিয়ে যত কথা

Leave a Reply