স্কিনের অনেক সমস্যার মধ্যে ওপেন পোরস একটি কমন সমস্যা৷ অনেকে প্রায় বলে ” পোরস কিভাবে দূর করব?” আসলে পোরস কখনো পুরোপুরিভাবে দূর করা সম্ভব না। কারণ আমরা প্রায় ২০ হাজারের মতো পোরস নিয়েই জন্মগ্রহণ করি। পোরস মানে লোমকূপ, এই লোমকূপ আমাদের শরীরের ভেতরের ঘাম বের করতে সাহায্য করে ও স্কিনের অয়েল কন্ট্রোল করে। তাই পোরস আমাদের অনেকের কাছে শত্রু মনে হলেও এটি স্কিনের জন্য উপকারী। আসলে সমস্যাটা হয় যখন ছোট ছোট পোরস গুলো খুব সহজেই খালি চোখে দেখা যায়৷ কিন্তু এখন অদৃশ্য পোরস সবার চোখে পরা শুরু করে? আসুন তার কিছু কারণ জেনে নেই।
- বয়সের সাথে সাথে পোরস বড় হতে থাকে
- অনেকে জেনেটিকাল কারণে পোরস বড় হয়।
- হরমোনাল কারণেও পোরস ওপেন হয়৷
- অতিরিক্ত রোদে পোড়া স্কিনের পোরস বড় হয়ে যায়৷
- অতিরিক্ত ফেইস ওয়াশ ব্যবহার করলে৷
- অস্বাস্থ্যকর ডায়েট
ওপেন পোরস কিভাবে কমানো যায়?
ওপেন পোরস রাতারাতি কমানো সম্ভব না৷ জেনেটিক্যালি বা যেকোনো হরমোনাক ইস্যু জন্য পোরস বড় হয়ে গেলে বিশেষজ্ঞ শরণাপন্ন হওয়া উচিত। তবে কিছু পদক্ষেপের ফলে আমরা ওপেন পোরস ছোট করতে পারি ও পোরস যাতে বড় না হয় সেজন্য স্কিনের বাড়তি যত্ন নেয়া প্রয়োজন।
ক্লিনজার : স্কিনে ময়লা ও অয়েল জমে থাকলে খুব ওপেন পোরস আরো বড় হয়৷ তাই ক্লিনজারের মাধ্যমে স্কিনকে সবসময় পরিষ্কার রাখতে হবে৷ তবে স্কিন টাইপ বুঝে সঠিক ক্লিনজার বেছে নিতে হবে৷ স্কিন অয়লি হলে ফোম ক্লিনজার ব্যবহার করতে পারেন এতে স্কিনের ভেতরের জমে থাকা ময়লা দূর হয়ে যাবে৷ তবে ড্রাই স্কিন হলে বেছে নিন ক্রিম ক্লিনজার। স্কিন সঠিক ভাবে পরিষ্কার না হলে পোরসে ময়লা জমে ব্রণের মতো আরো নানাধরণের স্কিন প্রব্লেম দেখা দিবে৷
টোনার : টোনার ওপেন পোরস কমাতে সাহায্য করে, লোমকূপ সংকুচিত করে। এছাড়া টোনার স্কিনের অয়েল কন্ট্রোল করতে সাহায্য করে। তাই স্কিনের কমপ্লিট কেয়ার নিতে চাইলে টোনার এড়িয়ে যাওয়া যাবে না৷
ময়েশ্চারাইজার : স্কিনের যেকোনো সমস্যাতেই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের কথা বলা হয়ে থাকে। স্কিনের জন্য ময়েশ্চারাইজার খুব উপকারী তা এখন আর কারো অজানা নেই। তাই ওপেন পোরসের জন্য নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন৷ ময়েশ্চারাইজার স্কিনের অয়েল কন্ট্রোলের পাশাপাশি স্কিনের আদ্রতাও বজার রাখে। স্কিনের সেবাম বেড়ে যাওয়া ওপেন পোরসের কারণ, ময়েশ্চারাইজার স্কিনের সেবাম কট্রোল করে। এতে স্কিনে অতিরিক্ত তেল প্রোডিউস হতে পারে না।
সানস্ক্রিন : ময়েশ্চারাইজারের পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ সানস্কিন৷ সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মি ওপেন পোরসের অন্যতম কারণ, সূর্যের আলো থেকে স্কিনকে রক্ষা করতে সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে৷ অনেকে মনে করেন শুধু বাইরে গেলেই সানস্ক্রিন এপ্লাই করতে হয়, আসলে তা নয় ঘরে বাইরে যেখানেই থাকেন না কেন রোজ সানস্কিন এপ্লাই করতে হবে। তবে বাসায় থাকলে সানস্ক্রিন রি-এপ্লাইয়ের প্রয়োজন নেই।
ব্যালেন্স ডায়েট : অতিরিক্ত তেল জাতীয় খাবার ও প্রসেসড ফুড ওপেন পোরসের কারণ৷ তাই তেল জাতীয় খাবার এড়িয়ে গিয়ে হেলদি ফুড খেতে হবে। প্রতিদিনের খাবারের ডায়েটে প্রোটিন ও ফাইবার জাতীয় খাবার রাখতে হবে৷ ভিটামিন সি স্কিনের জন্য বেশ উপকারী। তাই রোজ ভিটামিন সি জাতীয় খাবার খেতে হবে ও শরীরের চাহিদা অনুযায়ী পানি পান করতে হবে৷
প্রাইমার : যাদের ওপেন পোরসের সমস্যা আছে তাদের মেকআপ সহজে বসতে চায় না। তাদের ওপেন পোরস আছে এমন স্কিনে মেকআপ করার সময় প্রাইমার ব্যবহার করতে হবে, প্রাইমার পোরস হাইড করতে সাহায্য করে। এছাড়া অয়েল কন্ট্রোলের পাশাপাশি, মেকআপ দীর্ঘস্থায়ী করে।
দিনের পর দিন স্কিনে কেয়ার না করলে ওপেন পোরস হতে পারে। তাই দিনের কিছুটা সময় নিজের জন্য রেখে স্কিনের যত্ন নিন। ওপেন পোরস কমাতে অবশ্যই ধৈর্য নিয়ে স্কিন কেয়ার করতে হবে ও লাইফস্টাইলে চেঞ্জ আনতে হবে৷